এসএসসি’তে দুইবার ফেল করা ছাত্রটিই বিসিএসে প্রথম! । bdevent24.com









অনলাইন ডেস্ক:
তাইমুর শাহরিয়ার ৩৩তম বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে প্রথম হয়েছেন। হতেই পারেন, সেটাই স্বাভাবিক। তবে গল্পটি কিন্তু সহজ নয়। এসএসসিতে দুই বার অকৃতকার্য হয়েও হাল ছাড়েননি তিনি। অবশেষে ছিনিয়ে নিয়েছেন এই মর্যাদা। পাঠকদের জন্য আজ জানাবো স্বপ্ন ছিনিয়ে আনার সেই গল্প_ পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে সাধারণ গ্রেডে বৃত্তি পেয়েছেন তাইমুর। ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত বরাবরই ছিলেন প্রথম। অথচ এসএসসি পরীক্ষায় রসায়ন বিষয়ে অকৃতকার্য হলেন। ২০০১ সালে অনাকাঙ্ক্ষিত ফলাফল শুনে ঘাবড়ে যাওয়াই স্বাভাবিক।

আত্মীয়-স্বজন, শুভাকাঙ্ক্ষীরা হতবাক। তাইমুরের ভাষায়, আমার তখনকার অনুভূতিটাও বলে বোঝানো যাবে না। এটা সম্ভবও না। তবুও সবার সান্ত্বনা নিয়ে পরবর্তী বছর পরীক্ষা দিলেন তাইমুর। কিন্তু প্রথম বছরের মতোই পরিণতি ডেকে এনেছে ভাগ্য। আবারও রসায়নে ফেল। জীবনের এমন হতাশার মুহূর্তে তাইমুরের বাবা মো. মোতালেব হাওলাদার নান্নুর কয়েকটি কথাকে পুঁজি করে অপেক্ষা করতে হয়েছিল।
তাইমুরের বাবা বলেছিলেন, ‘জ্বলার মতো আগুন থাকলে, একদিন তা জ্বলে উঠবেই। দেরিতে হলেও। প্রতিভা থাকলে, তা একদিন প্রকাশ পাবেই। তাই ঘাবড়ানোর কিছু নেই।’ তাইমুর অবশেষে ২০০৩ সালে বরগুনার আমতলী এম ইউ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে জিপিএ ৩.৭৫ নিয়ে পাস করলেন। এরপর আমতলী ডিগ্রি কলেজ থেকে ২০০৫ সালে এইচএসসিতে জিপিএ ৪.৮০ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। তবে এতো কিছুর পরও তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পান। অবশেষে ২০০৯ সালে অনার্স এবং ২০১০ সালে মাস্টার্স শেষ করেন। ততদিনে ফলাফল বিপর্যয়ের ঘটনাটি অতীত। এরপর থেকে পুরোদমে চলতে থাকে বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি। ৩১তম বিসিএসে অংশ নিয়ে লিখিত পরীক্ষায় টিকলেও পরবর্তী ধাপ অতিক্রম করতে পারেননি। ৩২তম বিসিএস (বিশেষ) পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ হয়নি। অবশেষে ৩৩তম বিসিএসে অংশ নেওয়া তাইমুরের আত্মবিশ্বাস ছিলো আকাশচুম্বী।
দুই বার ফেল করা ছাত্রটি এবার বিসিএস পরীক্ষায় তুমুল আত্মবিশ্বাসের সাথে নিজেকে উপস্থাপন করেন। পছন্দ তালিকার প্রথমে পুলিশ ক্যাডার এবং দ্বিতীয়টি প্রশাসন ক্যাডারে থাকলেও তাইমুরের ভাগ্যে ছিল শিক্ষা ক্যাডারে প্রথম হওয়ার গৌরবময় স্থান! অবশেষে তিনি শিক্ষা ক্যাডারে প্রথম হয়ে সবাইকে চমকে দিলেন।

শিক্ষা ক্যাডারে প্রথম হওয়ার পর তাইমুরের প্রথম কর্মস্থল ছিল বরগুনা সরকারি মহিলা কলেজ। ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রভাষক হিসেবে আড়াই বছর চাকরি শেষে গত বছরের ১ মার্চ বদলি ভিত্তিক পদায়নে ঢাকার সরকারি কবি নজরুল কলেজে আসেন। সফলতা সম্পর্কে তাইমুর শাহরিয়ার বলেন, ‘সাময়িকের জন্য আমি হয়তো মচকে গিয়েছিলাম কিন্তু ভেঙে পড়িনি। বাকিটা আত্মবিশ্বাস আর সাধনার ফল।’ সূত্র: নিউজ 24


SHARE THIS

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 comments: