প্রেমিকা ক্যান্সারে আক্রান্ত জেনে যা করলো যুবক



একসঙ্গে শুধু গঙ্গায় ঝাঁপ দেওয়াই নয়। ঝাঁপ দেওয়ার আগে একে অন্যকে ওড়না দিয়ে বেঁধে রেখেছিলেন সুজাতা ও অভিষেক। যা দেখে পুলিশের ধারণা, মৃত্যুর আগের মুহূর্তেও যাতে একে অন্যকে ছেড়ে আলাদা না হয়ে যেতে হয়, তাই নিজেদের তারা বেঁধে রেখেছিলেন। আর তার তাতে পুলিশেরও সুবিধা হয়েছে একই সঙ্গে দু’টি মৃতদেহ খুঁজে পেতে।
রিভার ট্র্যাফিক পুলিশ জানায়, একটি ছেলের দেহ গঙ্গায় উপুড় হয়ে ভাসছে খবর পেয়ে সোমবার দুপুরে লঞ্চ নিয়ে তারা পৌঁছে যায় মেটিয়াবুরুজের নেতাজি সুভাষ ডকের কাছে। কিন্তু দেহ তুলতে গিয়ে পুলিশ দেখে উপুড় হয়ে থাকা ছেলেটির দেহের নিচে চিৎ হয়ে ভাসছে একটি মহিলার দেহ। তার পরেই পুলিশ নিশ্চিত হয় দেহ দু’টি গত ১৮ ডিসেম্বর গঙ্গায় ঝাঁপ দেওয়া সুজাতা বাজপেয়ী এবং অভিষেক সাউয়ের।
তদন্তকারীরা জানান, দেহ উদ্ধারের সময়ে তারা দেখেন একজনের কোমরের সঙ্গে অপরজনের কোমর ওড়না দিয়ে বাঁধা।
সোমবার লাশ উদ্ধারের পর এক পুলিশকর্মী জানান, সাধারণত দু’জন একসঙ্গে ঝাঁপ দিলে দেহ এক সঙ্গে কখনওই পাওয়া যায় না। এরা নিজেদের বেঁধে নিয়েছিলেন বলেই এক সঙ্গে দু’জনের দেহ উদ্ধার হল।
সাম্প্রতিক সময়ে এভাবে বাঁধা অবস্থায় গঙ্গা থেকে কোনও যুগলের দেহ উদ্ধারের ঘটনা ঘটেনি। কয়েক বছর আগে বাগুইআটি থানার কেষ্টপুর এলাকায় এক যুগলের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছিল।
১৮ তারিখ হাওড়াগামী লঞ্চ থেকে গঙ্গায় ঝাঁপ দেয় ওই যুগল। উত্তর বন্দর থানার পুলিশ পরে লঞ্চ থেকে সুজাতার ব্যাগটি উদ্ধার করে। যার মধ্যে মেলে বেশ কিছু কাগজপত্র ও প্রেসক্রিপশন। ওই প্রেসক্রিপশনগুলো থেকেই জানা যায় সুজাতার ক্যানসার আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা। সামনে আসে সুজাতা ও অভিষেকের প্রেমের সম্পর্কের কথাও।
এরপরই তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, সুজাতা মস্তিষ্কের ক্যানসারে ভুগছিলেন। কিন্তু ক্যানসার এমন পর্যায়ে ছিল যে চিকিৎসাতেও আর সারবে না বলেই জানতে পেরেছিলেন সুজাতা ও তাঁর বন্ধু অভিষেক। একসঙ্গে থাকা সম্ভব নয় জেনেই দু’জনে ওই দিন বাড়ি থেকে বেরোন এবং লঞ্চে উঠে ঝাঁপ মারেন। এর পর থেকেই দু’জনের খোঁজে একাধিক বার তল্লাশি চলে গঙ্গায়। শেষে সোমবার উদ্ধার হয় দু’টি দেহ।

SHARE THIS

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 comments: